বসতবাড়ি | চিঠি ৫ | স্মৃতিময় মুন্সীবাড়ি

2 January, 2021 Total View: 31

Ancestral home of Zafrun Nahar | Visualization and inking by Sumaita Tahseen & colouring by Ziaur Rahman Ovi © CONTEXT

মূল চিঠি:

আদরের নানুভাই/বোন আমার,

জীবনের প্রায় সম্পূর্ণ সময় গৌরবে অতিবাহিত করবার পর আজ অনুধাবন হচ্ছে যে আমরা কখনো তোমাদেরকে আমাদের শেকড়ের সাথে পরিচয় করিয়ে দিই নি,যেখান থেকে আমাদের বংশের পূর্বসূরীদের পদচারনা। আমি ও আমার সমবয়সী বন্ধুরা কাটিয়েছি চঞ্চলাপনা ও দুঃসাহসী এক শৈশব। যদি আজকেও তোমাকে সেই গল্প না বলি,তাহলে হয়তো আর কখনোই জানতে পারবে না কতটা সুন্দর, উজ্জ্বল ও সুরময় শৈশব কাটিয়েছি আমরা। তাই আজকের লেখাটি তোমাদের জন্যই।

প্রতিটি চাঁদনী রাতে আমার মা অর্থাৎ তোমাদের বড়মা সুয়ো ও দুয়ো রানীর গল্পসহ আরো কত কল্পকাহিনী আমাদের বলতেন, যার অধিকাংশই এখনো আমার স্মৃতিতে উজ্জ্বল। আমি নিশ্চিত তোমাদের অন্য নানা-নানীরাও আমার সাথে একমত হবেন। কিভাবে ভু্লে যেতে পারি কুয়াশাচ্ছন্ন শীতের সকালে ভাজা  মটরদানার স্বাদ, সাথে মুড়ির মোয়া, সে এক অবিস্মরনীয় আনন্দ!  কিভাবে ভু্লে যেতে পারি গ্রীষ্মের ছুটিতে গ্রামের বাড়ি বেড়াতে যাওয়া সাথে আম, কাঁঠাল, আনারস ও কষানো কলা-কাঁঠালের স্বাদ আস্বাদন! জিভে জল আনা সুস্বাদু সব খাবার !  প্রতি বিকালে বাড়ির বারান্দায় ছোট-বড় সকলে মিলে গোল্লাছুট, ছি বুড়ি, বউচি খেলার আনন্দ ছিল অবর্ননীয়। আবার রাত নামলেই শুরু হতো রুপালি চাঁদের আলোতে খেলা ও উপভোগ করা। শীত হোক কিংবা গ্রীষ্ম, এ যেন সর্বদার জন্য সীমাহীন উৎসবের ভেলায় ভেসে থাকার এক অসাধারন অনুভূতি। সত্য এটাই যে, দিনগুলো কখনোই ভুলবার  নয়।

আমরা আমাদের এমন অনেক প্রিয়জনদের হারিয়েছি যারা আমার এসব স্মৃতির অংশীদার ছিল। গ্রামের পুরনো ভিটেমাটিও আজ নতুন করে প্রতিস্থাপিত,পরিবর্তন হয়েছে প্রায় সবকিছুই, কিন্তু সুরটা রয়ে গেছে আজও। একদিন আমি ও চলে যাব অনেক দূরে, হয়ে যাব আকাশের অন্য আরেকটি তারা। তাই আমার আদরের নানুভাই/বোনরা, তোমাদের থাকাকালীন তোমরাও সেই জায়গাটি ঘুরে আসো, যেখানে আমরা আমাদের শৈশবের এক-একটি স্মৃতি বুনেছি। দৃষ্টি রাখো নীল আকাশে, প্রান ভরে নিশ্বাস নাও দূষনমুক্ত, পরিষ্কার, বিশুদ্ধ বাতাসে। বাতাসের মধ্য দিয়ে নিশ্বাসটুকু স্মৃতিতে নিয়ে যাও, তোমাদের আত্মাকে স্পর্শ কর যাতে যাওয়ার আগে তোমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মও তা উপলব্ধি করতে পারে।

প্রেরক:

জাফরুন নাহার (ওয়াসিল মুন্সীর পঞ্চম বংশীয় পুত্রী)

অধ্যাপক, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, ইডেন মহিলা কলেজ, ঢাকা।

জন্মতারিখঃ ২৫/০৮/১৯৬৬

গ্রামঃ ফরহাদনগর

ডাকঘরঃ ফরহাদনগর

জেলাঃ ফেনী

জাতিভুক্তিঃ বাঙালি মুসলিম প্রথাসম্মত পরিবার। ঐতিহ্যবাদী দৃষ্টিভঙ্গির পাশাপাশি উদার মানসিকতা ছিল এই পরিবারের সংস্কৃতি।

নির্মান সময়কালঃ প্রায় ২৫০ বছর পূর্বে

ভাঙার সময়কালঃ ১৯৮০/৮১

ওয়াসিল মুন্সীর বাকি দুই জন সঙ্গীর একজন পরীবাগে এসে বসতি স্থাপন করেন কিন্তু অন্য জনের কোন তথ্য পাওয়া যায় নি। পরীবাগের শাহ পরিবার এখনো একটি বিখ্যাত পরিবার।

Visualization and inking by Sumaita Tahseen
Visualization and inking by Sumaita Tahseen
Visualization and inking by Sumaita Tahseen
Based on the original drawing provided by the sender. Redrawn by: Saad Ben Mostafa

 

English version:

Among the families that spread the light of knowledge in Feni district for several generations, ‘Wasil Munshi Bari’ is one of the noteworthy ones. The first in the family tree was Wasil Uddin Munshi. He outset Wasil Munshi Bari almost 250 years ago. Having come from Iraq, Wasil Uddin Munshi with his knowledge of Islamic Studies was a highly spiritual and devoted person. He was dexterous in both Arabic and Persian languages. During his era, whoever had the expertise and intellect in Arabic and Persian, they were given the title of ‘Munshi’ to show respect. Legend has it that he travelled all the way from Iraq to Bangladesh with two of his companions to preach religion (date and year of arrival couldn’t be identified). Through Firingibazar of Chattogram, these three men arrived at Farhadnagar, Feni. Back then, this area was all barren land. After coming to this uninhabited place, they had devoted themselves to spiritual worship. Over time, the glory of their devotion spread everywhere. People from faraway places began to arrive with the aim of practicing religious customs and gaining knowledge. The natural beauty and love of inhabitants made Wasil Munshi stay permanently at this place. Slowly this new shelter took the name Munshi Bari.

 

Dear grandchildren of mine,

Spent almost all my life in its glory, only to realize that all these years, we haven’t introduced you to where you came from, we haven’t introduced you to your ROOTS. Growing up, your gran and others of my age, we had the most mischievous and adventurous childhood, and if I don’t tell you today the story of that, you will never know how beautiful, bright and melodious our childhood was, in our own, tiny village house. Hence I write to you today.

All those moonlit nights when your great grandmother would tell us stories of the good and the bad queens, tales from aesop’s fables and so much more are still embedded in my memories! I am sure your other grandmas/grandpas would also agree to this! How can I ever forget the taste of roasted peas in the misty winter mornings, the unforgettable delights of breakfast with “moa” made from husked paddy. How can I forget going to the village during summer vacations, tasting mango, jackfruit, pineapple,mashed banana and jackfruit! What mouth-watering delicacies; what a strange awe! How can I explain the joy of playing Gollachut, Chi buri, Bouchi with the young, old altogether in the courtyards every afternoon? And when the night would fall, enjoying and playing under the silver moonlight would start yet again. Whether winter or summer, it felt like we were floating on a never-ending raft of festivity at all times. The truth is, I never can.

We’ve lost a lot of our loved ones with whom I once shared these memories, the ancient village house has also been replaced by the new one now, everything else has changed too. But the essence of it all remains. One day, I would be gone too and become yet another star in the sky but you’d still be here. So my dearest grandchildren, while you are still here, do visit the place where we built our beautiful memories, take in the vision of blue sky, breathe in the clear, unpolluted, pure air. Breath the pure air to your heart’s content. Breath in till the memories, through the air, touches your soul, so that before you go, you can pass on the essence to your future generations too.

Sender:

Zafrun Nahar (child of Wasil Munshi’s fifth generation)

Professor, Political Science, Eden Women’s College, Dhaka

DOB: 25/08/1966

Area details:

Village: Farhadnagar

Post Office: Farhadnagar

District: Feni

Ethnicity: Bengali Muslim orthodox family. Generous mentality along with a traditionalist perspective was part of the family culture.

Construction period: Around 250 years ago

Demolish period: 1980/81

From Wasil Munshi’s  two companions, one settled in Paribag, and there is no information about the other. Shah Paribar from Paribag is still a renowned family.

 

 

 

We are thankful to Architecture graduate Sumaita Tahseen for her correspondence, Ziaur Rahman Ovi for cover image colouring  and Pronoy Saha for Bengali translation. 


হারিয়ে যাচ্ছে আমাদের গ্রাম। হারিয়ে যাচ্ছে মাটি ও মানুষের আত্মিক সম্পর্ক। জীবন ও জীবিকার সংগ্রামে আমরা ভুলতে বসেছি আমাদের শেকড়। গ্রামের বাড়ি আজ যেন এক নস্টালজিয়া। শুধু বেঁচে আছে আমাদের স্মৃতিতে। কি রেখে যাচ্ছি আমরা ভবিষ্যত প্রজন্মের উদ্দেশ্যে? সেই শিকড়ের খোঁজে আমরা খোলা চিঠির আহ্বান জানিয়েছিলাম।

আপনি যদি অংশগ্রহণের কথা বিবেচনা করে থাকেন তবে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব চিঠিটি প্রেরণ করুন।

বিস্তারিতঃ http://localhost/context/events/event/basatbari/

ইমেইল: boshotbari.context@gmail.com; context.editor4@gmail.com


Disclaimer:

CONTEXT (www.contextbd.com) and their collaborators jointly hold the copyrights of all contents including, but not limited to, all text, information, illustrations, images. You may not duplicate or reproduce any of the content on this website, including files downloadable from this website.

PEOPLE ALSO VIEW