Liberation War Monument at Mohishkhola by Ar Rajon Das | Tribute to Martyrs
25 March, 2016|Text from the architect. English version at the end of Bengali text|
স্থাপত্য সৃষ্টির নেপথ্য ভাবনা-
“সব ক’টা জানালা খুলে দাও না”
মহিষখোলা নদীর পূর্বপাড় ঘেঁষে একখানা প্রায় নিশ্চিহ্ন টিনের ঘর – যার অস্তিত্ব সরেজমিন প্রত্যক্ষ করেও কল্পনায় তার পূর্ণরূপ দেখা কল্পনাবিলাসীদের জন্যও হয়তো দূরূহ হবে এবং তার আশপাশখানা ৪২ বছর ধরে মনুষ্যস্পর্শহীন হওয়ায় প্রকৃতির লীলাক্ষেত্র অর্থাৎ জঙ্গলাক্রীর্ণ। সেই ঘরে ১৯৭১ সালে মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধের ফাঁকে ফাঁকে বিশ্রাম নিতেন। পাক হানাদারদের মাঝেসাঝে ধরে নিয়ে বন্দী করেও রাখতেন। মুক্তিযুদ্ধেও সময় এ অঞ্চলটি ছিল ১১ নং সেক্টরের ১ নম্বর সাব-সেক্টর। পশ্চিমে গা ঘেঁষে মহিষখোলা নদী, উত্তরে ২০০ গজের মধ্যেই ভারত সীমান্তে মেঘালয়ের পর্বতমালা, পূর্বে সংখ্যাতীত খাল-বিল আর সুবিশাল টাঙ্গুয়ার হাওড়। এ হাওড়ের সঙ্গে রাগে-অনুরাগে জড়িয়ে আছে আরেকটি স্নিন্ধ নদী যাদুকাটা। শ্রীচৈতন্যের জেষ্ঠ্য পার্ষদ অদ্বৈতাচার্য এই নদীপাড়েরই সন্তান ছিলেন। যুদ্ধের মাঝামাঝি সময়ে পাক বাহিনীর সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের এক ভয়াল সংঘর্ষ হয়। অনেক যোদ্ধা মারা যান। মহিষখোলা নদীর পাড়ঘেঁষা বাড়িটি ধ্বংস হয়ে যায় তখনই, শহীদ যোদ্ধাদের গণকবর রচিত হয় তারই এদিক-ওদিক। তারপর ৪২ বছর লতা-গুল্ম-বৃক্ষের চাদরে ঢাকা ছিল এই ইতিহাস।
সুনামগঞ্জ জেলার উত্তর-পশ্চিম প্রান্তে ভারত-সীমান্ত লাগোয়া ধর্মপাশা উপজেলায় মহিষখোলার এই প্রকল্পটি সেই আচ্ছাদিত সত্য উন্মোচনেরই ফলাফল। কাজ শুরুর পূর্বে প্রকল্প-স্থান প্রস্তুত করতে গিয়ে নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানকে শ্বাপদ তাড়ানোরও ঝুঁকি নিতে হয়। আর আমাকে সুবিশালকৃতি টাঙ্গুয়া ডিঙ্গোতে হয় বিশ বার।
স্থাপত্য সৃষ্টির প্রারম্ভে স্থপতি হিসেবে আমার মনে তাই ‘ঘর’ বিষয়টি ক্রিয়াশীল হয়। নদীর পশ্চিম পাড়ে এই ‘বধ্যভূমি’তে বধ-হওয়া শহীদরা ঘুমিয়ে আছেন। ঘুমন্ত এই প্রাণেদের জাগ্রত্য চেতনার ‘আশ্রয়স্থল’ নির্মানই তাই উদ্দিষ্ট হয়ে ওঠে। নদী রূপ নেয় রূপক-এ। সে স্বাধীনতার কথা বলা শুরু করে।
© Rajon Das
তারপর……
পূর্ব-পশ্চিম অক্ষ বরাবর সমান্তরাল দুটি সুউচ্চ দেয়াল ‘ন’ ফুট বেদীর উপর এসে দাঁড়ায়, তার উপর ছায়া হয়ে ছাদ এসে বসে। সিড়ি ভেঙ্গে পূর্বদিকের প্রবেশ বিন্দুতে চোখ রাখলে পশ্চিমের নদী আর তার গায়ে-এসে-পড়া আকাশ দেখা যায়। পূর্ব-পশ্চিম উন্মক্ত হওয়ায় দুই দেয়ালের ঘর রচিত হয়ে যায়। উত্তর-দক্ষিণের ২৭ ফুট উচু দেয়ালে (দেড় ফুট পুরু) ব্যাকরণ ভেঙ্গে অনেকগুলো ছোট-বড় জানালা আড়াল খুলে আলোর উৎস হয়ে উঠে। ঠিক চোখ-মেলে-তাকানোর মতো। ‘যারা এই দেশটাকে ভালবেসে দিয়ে গেছে প্রাণ’ , তারা তো বদ্ধ ঘরে থাকে না, যে ঘরে দোর-জানালায় অর্গল টানা, যে ঘরে আলোর ঝলক নেই, দোলা নেই, সে ঘরে স্বাধীনতা প্রবেশ করে না। সেই ঘর অন্ধকারের অধীন। তাই ‘সব কয়টা জানালা’ই খুলে আছে।
‘জানালা’ একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপত্তাংশ, যার ব্যবহারিক ও মনোস্তাত্ত্বিক মূল্য অতুলনীয়। এটি আমাদের দর্শনেন্দ্রীয়ের মতো। চোখ দিয়ে যেমন আমাদের দেহ-ঘরে আলো প্রবেশ করে, আমাদের প্রথম অভিজ্ঞতা চোখ দিয়ে হয় (‘জ্ঞান চক্ষু’), তেমনই দেওয়ালকে মুক্তি দেয় জানালা। তবেই দেয়ালের চোখ ফুটে আলো-বাতাস প্রবেশ করে গৃহে প্রাণের সঞ্চার হয়। এজন্যই ‘খোলা জানালা’ আর ‘স্বাধীনতার চেতনা’ সমার্থক হয়ে উঠেছে।
বেদীর তিন দিক ঘিরে রয়েছে পানির আধার যা পশ্চিমে নদীর সঙ্গে সংযুক্ত। প্রতি বর্ষাতেই মেঘালয়ের পাহাড়ী ঢল নামলে নদী উপচে বেদীর তলায় কিছুক্ষণের জন্য হাঁটু জল জমে যায়। এটা হাওড় অঞ্চেলের চেনা দৃশ্য।
এভাবেই হাঁটু জলে দাঁড়িয়ে ‘সব ক’টা জানালা’ খুলে আমাদের ডাকছে ওরা,
‘যারা এই দেশটাকে ভালবেসে দিয়ে গেছে প্রাণ’।
|English|
Concept behind Architecture:
Let all the windows open
A ruined tin shed house, situated at the Eastern bank of MohishKhola River gives a discrepancy between reality and imagination as it is very tough for even a highly imaginative person to make the real portrayal of the actual form of the house in reality. The surroundings of the house have been a playground of nature for 42 years as it did not get the touch of human activities. It has become a jungle land composed by nature at her playful wish.
The room was used as a resting place for the Freedom Fighters during the time of 1971. The Freedom Fighters used to captivate the Pakistani soldiers here sometimes. This area was in the number one subsector of 11th Sector during the liberation war of 1971. Mohishkhola River is at the Western part of it and the mountains of Meghaloya are situated within 200 yards of the site; and there are countless numbers of canals, marshes and vast Haor Tangua at the Eastern part of the place. The beautiful river Jadukata is closely related with touchy association with this Haor. Adwaitacharya, a senior courtier of Sri Choitanya was born in this place. A bloody fight was fought between Freedom Fighters and the Pak Army during the middle period of the Struggle of Independence at this place. So many Freedom Fighters died at that time, the house situated by the river was destroyed; and the place became the mass burial place of the Freedom Fighters. After that, this history was covered with the curtain of nature for 42 years before 2013.
This project is the result of the approach to discover the hidden truth related to the place at Dharmapasha Upozila in North-Western part of Sunamganj. The implementing authority was Jila Parishad of Sunamganj. Before starting the construction of the project, the Construction Company even had to take the risk of stamping out the wild predators from the land; and I had to go across the vast Tangua Haor at least for twenty times.
Before the beginning of design, the concept of ‘house’ came to my architectural mind as a working force. Slaughtering Place (Boddho Bhumi) of the Western bank of the river is a mass burial area of Freedom fighters where the Martyrs are resting in peace. So, the allegorical objective of the project is to create a dwelling place of ever ‘awakening apprehension’ of these ‘sleepy martyr souls.’ The river is serving as the scope of metaphor here.
Along the East-West axis there are two tall (27 ft) and thick (18 in) walls standing parallel to each other on a nine feet high plinth which is casted by a roof of shadow. After climbing the staircase, at Eastern point entrance, the view of sky can be seen on the Western river bosom. As the East-west part is open, it has become a house of two walls. At the North and South wall, there are so many windows of different size through the 27 feet high wall by breaking the fundamental rules of traditional patterns. These windows have become the source of light by breaking the boundary. It is similar to awaken from asleep.
The Martyrs who have sacrificed their life for the love of this country can’t live in the darkness of dungeon. The house whose doors and windows are blocked; and there is no scope of playful air and light of independence can’t be the dwelling place of Martyr souls. For this reason ‘all the windows’ are wide open.
‘Window’ is an important architectural component which is used as a great functional and psychosocial value. It is similar to our visual organ. Our body also gets light through eyes. That is why these are called ‘eyes of knowledge’ which are similar to the windows of a house that make the walls free from darkness. The room becomes lively with light and air by opening its window-eyes. The entrance of light and air through the windows has become the symbol of Conscience of Independence.
Three sides of the plinth are surrounded by water which is connected to the river at the Western part. At every monsoon, the water flow comes down from the hills of Meghalaya; and the lower part of the plinth goes under knee level of waster for time beings which is a familiar scene of Hoar area.
Thus this structure personifies the Martyrs who have sacrificed their lives for the loves of this country are beckoning us by opening all the windows, standing on knee-water.
Constrains and solutions:
- The main problem was communication system. The only way of communication was boat through the Tangua haor. That’s why materials were carried to the site during the rainy season as it was impossible to transport the building materials by road in winter.
- There is no electricity in that region. So artificial lighting system was not needed and that’s why the erected structure has been designed by keeping in mind that- no electricity, only sun and moon are the source of light
Project facts:
- Project: Liberation War Monuments at Subsector 01 of 11th Sector
- Location: Vill: Mohishkhola, P.S. Madhyanagar, Upazilla: Dhormopasha, Dist: Sunamganj, Bangladesh.
- Executing Authority: District Council, Sunamganj
- Land area: 18,700 Sft.
- Type of Architecture: Monumental
- Estimated cost: 1,50,00,000.00 BDT.
- Construction Period : July 2012 to September 2013
- Present condition: Completed and open for all