প্রিয় উষ্ণীষ,
তুমি দ্রুত বড় হয়ে যাচ্ছো। তোমার বয়স এখন চৌদ্দ বছর। কদিন পরে তুমি হয়ে যাবে একজন সুদর্শন তরুণ। তখন তোমাকে আর পায় কে? তোমার তখন মনে রঙ লাগবে। চোখে খেলা করবে রঙিন স্বপ্ন। এখনই তোমাকে গল্প করার জন্য পাওয়া যায় না! সারাদিন তোমার চোখের সামনে খোলা থাকে হয় স্মার্ট ফোন নয় ল্যাপটপ, নয় টিভি স্ক্রিনে ভিডিও গেমের জগতে ঘুরে বেড়ায় তোমার চোখ আর মন। কানে গোঁজা থাকে ইয়ারফোন। ভার্চুয়াল পৃথিবীই এখন তোমাদের পৃথিবী। তোমার জন্ম শহরে। বড়ও হয়ে উঠছো শহরে। আমরা অনেকদিন ঢাকার হাতিরপুল এলাকায় ভাড়া বাসায় ছিলাম। সেখানে তোমাদের কোনো খেলাধুলার জায়গা ছিল না। তোমার বাবা একটু প্রাকৃতিক পরিবেশে, খোলা জায়গায় যাতে তোমরা ঘোরাফেরা করতে পারো, সেজন্য ঢাকার বর্ধিত আবাসিক এলাকা বসুন্ধরায় ফ্লাট কিনলো। এখানে ছিমছাম পরিবেশ। রাস্তাঘাট বেশ নিরিবিলি। বাসায়ও আছে সুন্দর বাগান, খোলা কমন স্পেস। তবে সেসব জায়গায় খেলাধুলা করার সময়ই নেই এখন তোমার। কিন্তু খোলামেলা জায়গায় ঘুরতে, দৌড়াদৌড়ি করে খেলতে তুমি অনেক ভালোবাসো, সেটা আমি জানি। কারণ, ছোট থাকতে তুমি মানিকগঞ্জের পশ্চিম দাশরা গ্রামে তোমার দাদাবাড়ি, যেটা তোমার গ্রামের বাড়ি, যতবার গিয়েছো, ততবারই তুমি খোলা উঠোনে খেলায় মেতে উঠেছো। বারান্দা থেকে লাফিয়ে নেমেছো উঠোনে। আঁজলা ভরে ধুলো নিয়ে এর ওর গায়ে ছুঁড়ে দিয়েছো। গাছের পাতা ছিঁড়ে ডাল ভেঙে একাকার করেছো। এসব দেখতে আমার খুব ভালো লাগতো। আমার তখন তোমার বাবার ছোটবেলার কথা মনে হতো। ছোটবেলায় তোমার বাবা ধুলোমাটি দিয়ে সারাদিন খেলতো। দিনশেষে আমি যখন বাড়ি ফিরে আসতাম তখন ওকে মনে হত একটা মাটির পুতুল। হ্যাঁ, আমি তখনও ছিলাম ছাত্রী। তোমার বাবার ফুপুদের সাথে আমি কলেজে যেতাম। ফিরে আসতে আসতে বিকেল হয়ে যেত। গাছপালার তলা দিয়ে পায়েচলা পথ পেরিয়ে আমি যখন বাড়িতে ঢুকতাম, তোমার বাবা দৌড়ে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরতো। গা ভরতি মাটি। নাক দিয়ে পানি পড়ছে। জামাকাপড়ে কাদা পানি। তোমার বাবার বয়স ছিল তখন তিন-সাড়ে-তিন বছর। ছুটোছুটি করে বেড়াতো। মোরগমুরগির পেছনে ছুটতো। কলতলায় গিয়ে পানি কাদা মাখামাখি করতো। সবজি বাগানে গিয়ে গাছের লতা ধরে টানাটানি করতো। তুমি গত কয়েক বছরে বেড়াতে গিয়ে যে বাড়ি দেখেছো, তোমার বাবার ছোটবেলায় কিন্তু বাড়িটা এমন ছিল না। ছিল অন্যরকম। শান্ত, খোলামেলা, রৌদ্রময়, ছায়াঢাকাও ছিল। তাই বাড়ির নাম ‘ছায়ানীড়’। একটা ছোট্ট শ্বেতপাথরে বাড়ির নামফলকটা এখনও সদর দরজায় লাগানো আছে। এখন বাড়িতে কেউ থাকে না বলে ছায়ানীড়ের সৌন্দর্য আর সমৃদ্ধি সবই শেষ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু যখন আমি ওখানে থাকতাম, সেটা হল ১৯৭৬ থেকে ১৯৮১ এই পাঁচ বছর। তখন বাড়ি ছিল লোকজনে সরগরম। তোমার বাবার দাদা দাদি চাচা ফুপু সবাই তখন ঐ বাড়িতে। সবাই স্কুল কলেজে পড়ে। আমার চাচা শ্বশুরও সপরিবারে ঐ বড়িতে থাকতেন। তাঁদের আলাদা ঘর ছিল। কিন্তু এখন যেমন দেখছো তেমন ছিল না। এবার তাহলে বাড়িটার একটা মানচিত্র আঁকি।
১৯৭৩-এ বিয়ের পরে আমি যখন প্রথম ঐ বাড়িতে যাই, সে সময়ে বাড়িতে ছিল মোট দুটো ঘর। পুব দিকে বড় ঘর আর দক্ষিণ দিকে এক রুমের একটা ছোট দোচালা ঘর। এ ঘরটাতে আমি থাকতাম। (কয়েক বছর পরে অবশ্য ঘরটির পাকা দেয়াল করা হয়েছিল। রুমও একটা বাড়ানো হয়েছিল।) আর মূল ঘরটি ছিল উত্তরে দক্ষিণে অনেকটা লম্বা। ওখানে আসলে দুটো ঘর একসাথে তোলা হয়েছিল। একপাশে তোমার দাদাদের ঘর, আর অন্যপাশে তোমার দাদার ছোট চাচার ঘর। দুই ঘরের সংযোগ স্থানে একটা ছোট রুম। এটা কমন। অনেক বছর পরে এইসব জায়গা ভাগটাগ হয়ে আলাদা আলাদা ঘর আর সীমানাদেয়াল তুলে বাড়িটাকে ঘিঞ্জি বানিয়ে ফেলা হয়েছে। বলছিলাম তোমার বাবার শৈশবকালে বাড়িটার চেহারার কথা। বাড়ির বাইরের দিকে একটা উঠোন আর ভেতরে একটা উঠোন। মূল ঘর থেকে নেমে ভেতরবাড়ির উঠোন পেরিয়ে পশ্চিম দিকে রান্না ঘর। উঠোনের মাঝখানে ছাতার মত ছড়ানো এক পেয়ারা গাছ। বাড়ির সবাই কাঠবিড়ালির মত যখন তখন এ গাছের ডালে চড়ে বসে থাকতো। খুব মজার পেয়ারা হত। রান্নাঘরের পেছনের অংশে ছায়াঢাকা অনেকটা জায়গা। সেখানে বড় বড় কাঁঠাল, নারিকেল, বড়ই পেয়ারা নিম আর মেহগনি গাছ। আর ছিল মনের আনন্দে ডালাপালা মেলা একটা এলাচি লেবু গাছের জঙ্গল। গাছ ভরতি সবুজ বাল্বের মত লেবু। সুগন্ধে পুরো জঙ্গল মউ মউ। একপাশে টিউবওয়েল। মানিকগঞ্জে পানির অভাব। টিউবওয়েলের পানিও আয়রন ভরতি। সেখানে তোমাদের বাড়ির টিউবওয়েলের পানি খুব ভালো ছিল। আশেপাশে ছিল বেশ কয়েকটা দরিদ্র রাজবংশী জেলে পরিবার। সেসব বাড়ির বউ ঝিয়েরা কলসি নিয়ে আসতো কলের পানি নিতে। আর সকালের নাশতা খাওয়া হয়ে গেলে একরাশ থালাবাটি হাড়িপাতিল নিয়ে কলতলায় মাজতে বসে যেতাম। ততক্ষণে বাজার আসতো। সেই ছায়াঢাকা গাছতলাতে বসে আমরা মাছ তরকারি কুটে ধুয়ে রান্নার জন্য প্রস্তুতি নিতাম। কলতলা থেকে একটু দূরে একটা ডোবা ছিল। মাটি কেটে বাড়ি বাঁধানোর সময় তৈরি হয়েছিল ঐ ডোবা। আমরা সেখানে কাপড় টাপড় কাচতাম। তবে পানি তত ভালো না হওয়াতে গোসল করতাম না। কিন্তু রাজবংশী পাড়ার লোকজন এসে তাতে স্নানও সারতো। তোমাদের বাড়ির পুব দিক দিয়ে বয়ে যেত একটি খাল। উত্তরে দক্ষিণে প্রবাহিত এ খালটি কালীগঙ্গা নদীর এক পাশ দিয়ে বেরিয়ে মানিকগঞ্জের কয়েকটি গ্রাম বেড় দিয়ে আবার আর এক পাশে কালীগঙ্গার সাথেই মিশেছে। এ খালটিতে বলতে গেলে সারা বছরই পানি থাকতো। আমরা কাপড়চোপড় ধোয়া আর গোসলের জন্য খালেই চলে যেতাম। বর্ষাকালে খালে লঞ্চ চলতো। লঞ্চের শব্দ শুনলেই তোমার বাবা ভোঁ দৌড় দিয়ে খালের পাড়ে চলে যেত। যতক্ষণ লঞ্চ দেখা যেত দাঁড়িয়ে থাকতো। একটা লঞ্চের নাম ছিল ‘মনের মিল’। সেটাকে তোমার বাবা আধো উচ্চারণে বলতো ‘মমের মিল’! এখন সে খাল শুকনো খটখটে। খালের দু পাড় স্বার্থান্বেষী মহলের দখলে। সেখানে নানারকম অবৈধ স্থাপনা গড়ে উঠেছে। আর খাল হয়েছে ময়লা আবর্জনার নর্দমা।
একবার বাড়িতে বনায়ন কার্যক্রম চললো। তোমার দাদা স্থানীয় কৃষি অফিস থেকে বেশ কিছু গাছের চারা নিয়ে এলো। নারিকেল, নিম, জলপাই, আম, জামরুল আর নানারকম কাঠের চারা। সে সব লাগানো হল। তোমার ছোট্ট বাবাটির হাত দিয়ে আমরা একটা মেহগনি গাছের চারা লাগালাম খালের পাড় ঘেঁসে। যাতে গাছটা বড় হয়ে খালের মাটি রক্ষা করতে পারে। গাছটা বেশ বড়–ও হয়েছিল। কিন্তু পরে দখলদারদের কারণে ওটা কাটা পড়েছে। দক্ষিণ দিকটা জুড়ে ছিল অনেকটা ফসলের জমি। সেখানে বেশিরভাগই পাট ধঞ্চে আর তরিতরকারির চাষ করা হত। আমার শাশুড়ি, মানে তোমার বড় আম্মা বাড়ির দক্ষিণ সীমানায় লাইন ধরে লাগিয়েছিলেন প্রায় দশ বারোটা নারিকেল গাছ। মৌসুম অনুযায়ী শাকসব্জিও লাগাতেন। জাংলার নিচে ঝুলে থাকতো লাউ-চিচিঙ্গা-চাল-কুমড়ো। আর নিচের জমিতে ফলতো টমেটো বেগুন ঢেঁড়স, পুঁইশাক। প্রতিদিন তাজা শাক সবজি আর বাজার থেকে কিনে আনা তাজা মাছ রান্না হত। একবার একটা গাভীও কেনা হয়েছিল। এত সুন্দর ছিল দেখতে, তোমার দাদার বোনেরা সেই গাভীর নাম দিল ববিতা। বাড়ির সদর দরজা পেরিয়ে দক্ষিণ দিকের টানা জায়গাটায় কয়েকটা নারিকেল সুপুরি আর কাঁঠাল গাছ ছিল। তার ছায়ায় বসে ববিতা জাবর কাটতো। তোমার বাবা একটা ঘাস কিংবা একটা কাঁঠাল পাতা গরুটার মুখের সামনে নিয়ে বলতো, খাও গরু খাও, অনেক মজা।
উত্তর দিকটার কথা বলি এবার। বাড়ি থেকে বের হওয়ার জন্য আমরা তখন উত্তর দিকটাই ব্যবহার করতাম। একটা বেশ বড়সড় বাঁশঝাাঁড় জায়গাটাকে ছায়াময় করে রেখেছিল। খোলা কিছু জমি। ভাঁট ফুল, ছিটকি, বনকচু আর কলাবতীর জঙ্গলে ভরতি। আর একপাশে একটা শিমুল গাছ। শীত শেষ হলে লাল ফুলে ভরে যেত। বড় বড় ভারি ফুল ধুপ ধুপ করে নিচে পড়তো। শিমুলের ডালে বসে বসন্তের কোকিল ডাকবে না তা কি হয়? কোকিলও ডাকতো! শি শি করে হাওয়া বইতো। নিচে ঝরা বাঁশের পাতার ওপর পড়ে থাকতো শুকনো মেহগনি ফল। ওপর দিয়ে সর সর করে চলে যেত গুঁই সাপ আর গিরগিটি। ওরা ভয় পেত না। মাঝে মাঝে চলা থামিয়ে লাল লাল মোতির মত চোখ তুলে তাকিয়ে থাকতো। সে সময় শুধু তোমাদের বাড়ির চারপাশেই না আশেপাশেও অনেক জঙ্গল ছিল। এখানে সেখানে বাঁশঝাড় আর বড় ছোট গাছপালা, পুরোনো বাড়িঘর, ধ্বংসপ্রাপ্ত মন্দির দালান ঘিরে গজিয়ে ওঠা অনেক জঙ্গল ছিল। সেখানে থাকতো শেয়াল। এক দিক দিয়ে সন্ধ্যা হতো আর এক দিক দিয়ে ডেকে উঠতো শেয়ালের দল। একটা শেয়াল ডাকলে সমস্বরে অন্যগুলোও ডাকতে থাকতো। শেয়ালের ডাক খুব ভয় পেত তোমার বাবা। যতক্ষণ শেয়াল ডাকতো ততক্ষণ ভয়ে কাঁদতো ও! তখন গ্রামে ইলেকট্রিসিটি নেই। ঘরে আলো বলতে টিমটিমে হারিকেন। কাজেই ঐ ভুতুড়ে অন্ধকারে শেয়াল তো শেয়াল একটা বিড়াল ম্যাও করে উঠলেও ভয় লাগতো! এখন সেই বাড়ির ভূগোল অনেকটা বদলে গেলেও গাছপালা ছাওয়া একটা প্রাঙ্গণ আছে আর আছে স্মৃতির গন্ধ নিয়ে হু হু করে বয়ে যাওয়া বাতাস।
ইতি
তোমার দাদি
ঝর্না রহমান
বসুন্ধরা, ২০ নভেম্বর ২০২০
English version | Translated by Noshin Tuba
Dear Ushnish,
You are growing up so fast. Your age is fourteen now. In a few days, you will turn into a handsome young man. Who gets you then? You will get colours in your heart. Colorful dreams will play before the eyes. I don’t get to have small talk with you already! All day long, your eyes are stuck to the screen of either smartphone or laptop, your mind roams around the world of videogames or on the TV screen. Earphones are hanging from the ears. The virtual world is your world now. You are born in the city. You’ve been brought up in the city as well. We lived in a rented house in Hatirpul area of Dhaka for a long time. There was no place for you to play. So your father bought a flat in Bashundhara, an extended residential area of Dhaka, so that you can move around in a natural environment, in an open space. It’s quite a serene environment there. The roads are quite secluded. The house also has a beautiful garden, open common spaces here and there. But now you don’t have time to play there. But I know, you love to run around and play in the open. Because, when you were little, you used to play in the open yard every time you went to your grandfather’s house in West Dashara village of Manikganj. You used to gambol around the open yard, jumping off the porch into the yard. You’d take those handful of sands, sprinkling on others. Creating your own mess, plucking the leaves and breaking the stalks of trees. I so much loved to see all these things. Those reminded me of your father’s childhood. As a child, your father used to play in the dust all day long. When I returned home at the end of the day, he looked like a clay doll. Yes, I was still a student back then. I used to go to college with your father’s aunts. It would have been afternoon for me to return. When I entered the house through the walkway shaded by trees, your father used to rush in to hug me. His body bathed in dust, runny nose, mud all over his clothes. Your father was three-and-a-half years old then. He used to play around, run after the roosters all day. Used to play in the muddy water beneath the tubewell. He used to run to the vegetable garden to play with the vines. The house you saw in the last few years was not like this when your father was a child. It was different. It was calm, open, sunny and also shadowy. That is why the name of the house is ‘Chhayaneer (The Shadowy Nest)’. The nameplate of a small white stone house is still placed in the front door. Since no one is living there now, the beauty and wealth of ‘Chhayaneer’ is all but lost. But when I was there, it was 1976 to 1981 – these five years. At that time the house was always filled with the resonance of people’s chitter-chatter. Your father’s grandparents, uncle and aunt were all living in that house back then. Everyone used to go to school or college at that age. My uncle-in-law also lived with his family in that house. They had separate rooms there. But it was not as you see it now. Now, let’s draw a plan of the house.
When I first went to that house after my marriage in 1973, there were two rooms. A large one on the east side and a small pitch roofed one on the south. I used to live in this smaller one (A few years later, however, the room was paved with walls, a room was also extended later on). And the main house was quite elongated from north to south. There were actually two houses built together. On one side is your grandfather’s house, and on the other side is your grandfather’s youngest uncle’s house. A small room was there at the junction of two houses. This one was the common room. Many years later, after these properties have been divided into separate rooms, boundary walls and smaller rooms one after one made it crumby. I was talking about the outlook of the house when your father was a child. There was a yard on the outside of the house and another one inside. The kitchen was on the west side, down from the main house and across the backyard. A guava tree spread the canopy like an umbrella in the middle of the yard. Everyone in the house used to sit on the branches of this tree like a squirrel. The guava of that tree was really delicious. The kitchen backyard was pretty shadowy. There were big jackfruit, coconut, guava, neem and mahogany trees there. And was an orchard of cardamom and lemon trees spreading stalks with their heart’s content. The lemon trees were filled with lemons like green bulbs. The whole jungle remained overwhelmed with the aroma. There was a tubewell on one side. In Manikganj, we had scarcity of drinking water. Tubewell water also contained plenty of iron. The water from the tubewell in our house was pretty drinkable then. There used to live several poor Rajbangshi fishermen families nearby. The wives and daughters of those houses used to bring pitchers to fetch tap water. And after having breakfast, we used to sit on the floor with all the dishes to wash. By then the groceries would have arrived. Sitting in the yard by the shadowy trees, we washed and prepared the fish for cooking. There was a pond a little away from the tubewell. The pond was dug while building the house by cutting soil from there. We used to wash clothes there. However, I did not take a bath because the water was not so good. But the people of Rajbangshi Para used to come and bathe in it. A canal used to flow towards the east side of this house. The canal, which flows from north to south, exits on one side of the Kaliganga river, fences several villages in Manikganj and merges with the Kaliganga on the other side. This canal was filled with water all year round. We would go to the canal to wash clothes and take a bath. Launches used to run in the canal during the rainy season. As soon as your father heard the sound of the launch, he would rush off to the bank of the canal. Stood there as long as the launch could be seen. One of the launches was named ‘Moner Mil’. Your father used to call it ‘Momer Mil’ in his childish accent! The canal is bone-dry now. Both sides of the canal are occupied by selfish troops.
Various illegal structures are built there now. And the canal has become a sewer. Once we arranged some tree plantation activities in our house. Your grandfather brought some saplings from the local agricultural office. Coconut, neem, olive, mango, jamrul and various wooden saplings. So all of those were planted. With your father’s tiny hands, we planted a mahogany sapling along the canal. So that the tree can grow and protect the soil of the canal. The tree was quite large. But later it had to be cut down due to the occupiers. There was a lot of cropland across the south. Most of the jute and vegetables used to grow there. My mother-in-law, which means your great-grandmother planted about ten to twelve coconut trees along the line at the southern boundary of the house. She also planted vegetables according to the season. Gourd-chichinga-rice-pumpkin used to hang from the Jungla (a kind of bamboo pergola). In the lower lands, tomatoes, eggplants, potatoes, spinach are grown. Every day fresh vegetables and fresh fish bought from the bazaar were cooked. Once a cow was also bought. It was so beautiful to see, your grandfather’s sisters named that cow Babita. There were a few coconut supuri and jackfruit trees on the south side of the front door of the house. Sitting by its shadow, Babita used to chew the cud. Your father used to put grass or a jackfruit leaf in front of the cow’s mouth and say, “eat, cow, eat, it’s yummy!”
Let’s talk about the north side now. We used to use the north side to get out of the house. A large bamboo grove overshadowed the place. Some open land. Bhant ful (flowering shrub with little white flowers), chitki, bankachu and kalabati plants covered the whole ground. And on one side was a Shimul tree. When the winter was over, it would be full of red flowers. Flowers used to drop down on the ground. What is spring if the cuckoo doesn’t call sitting on the branches of Shimul? The cuckoo used to koo!
Then, the chilly wind started to blow. Dried mahogany fruit used to shred on the dry bamboo leaves. Snakes and chameleons used to crawl over it here and there. They were not afraid at all. Sometimes they would stop and look up with their red pearl-like eyes. At that time there were many jungles not only around your house but also spread further. There were bamboo bushes and big and small trees, old houses, lots of jungles growing around ruined temples. Foxes used to live there. As it started getting dark, a fox would howl and the rest of the group would join in harmony. Your father was very afraid of the howl. As long as the fox hawled, he kept crying in fear! By that time, there was no electricity in the village. There was that dipping hurricane lamp as far as light in the room was concerned. So in those haunted dark nights, it was so spooky even if a cat meowed around, let alone the fox howls! Today, the outlook of that house may have changed a lot, but there still remains a courtyard shaded by trees and the breeze blowing with the fragrance of old memories.
Love,
Your grandmother
Jharna Rahman
Bashundhara, 20 November 2020
হারিয়ে যাচ্ছে আমাদের গ্রাম। হারিয়ে যাচ্ছে মাটি ও মানুষের আত্মিক সম্পর্ক। জীবন ও জীবিকার সংগ্রামে আমরা ভুলতে বসেছি আমাদের শেকড়। গ্রামের বাড়ি আজ যেন এক নস্টালজিয়া। শুধু বেঁচে আছে আমাদের স্মৃতিতে। কি রেখে যাচ্ছি আমরা ভবিষ্যত প্রজন্মের উদ্দেশ্যে? সেই শিকড়ের খোঁজে আমরা খোলা চিঠির আহ্বান জানিয়েছিলাম।
আপনি যদি অংশগ্রহণের কথা বিবেচনা করে থাকেন তবে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব চিঠিটি প্রেরণ করুন।
বিস্তারিতঃ http://localhost/context/events/event/basatbari/
ইমেইল: boshotbari.context@gmail.com; context.editor4@gmail.com
Disclaimer:
CONTEXT (www.contextbd.com) and their collaborators jointly hold the copyrights of all contents including, but not limited to, all text, information, illustrations, images. You may not duplicate or reproduce any of the content on this website, including files downloadable from this website